অলবার্সের প্যারাডক্স কি
Olbers’ Paradox (অলবার্সের কূটাভাস): মহাবিশ্ব অন্ধকারের সমস্যা। রাত্রির আকাশের অন্ধকারের সোজাসুজি ব্যাখ্যা হলো পৃথিবীর উল্টা দিকে সূর্য। কিন্তু এটা ব্যাখ্যা করা যায় না যে কোনো তারকা থেকে মহাবিশ্বে বহুদূরে বিশ্বজগত অন্ধকার, আলোকময় নয়।
তারকাভরা সীমাহীন বিশ্বে যেখানে কোনো আন্তঃতারকার মাধ্যমে শোষণ ঘটে না, সেখানে আমাদের চোখ থেকে দৃষ্টিগোচরের রেখা শেষ পর্যন্ত কোনো একটি তারার দিকে শেষ হবে। যদি সব তারা সূর্যের মতো তাহলে আকাশের যে কোনো বিন্দু সূর্যের চাকতির মতোই প্রোজ্বল হবে। আকাশ (অথবা খ-গোলক) সূর্যের চাকতি থেকে ১৮০,০০০ গুণ বড় এবং পৃথিবীর উপর যে তারকারশি পতিত হয় তা সূর্যের আলোক থেকে ১৮০,০০০ গুণ বেশি তীব্র হবে। কিন্তু আসলে তা হয় না। ১৯৫২ সালে হেরমান বডি (Herman Bondi) এই মহাবিশ্ব অন্ধকারের সমস্যার পুনরুজ্জীবন ঘটান এবং তা উনবিংশ শতাব্দীর জ্যোতির্বিজ্ঞানী ভিলহেলম অলবাসের সমস্যা হিসাবে চিহ্নিত করেন যদিও এখন আমরা জানি এই সমস্যা তার আগেও এডমান্ড হ্যালি এবং অন্য জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা আলোচনা করেছিলেন।
১৮৪৮ সালে এডগার এলান পো বললেন যে, বিশ্ব এতটা প্রাচীন নয় যে অতি দূরবর্তী তারকা থেকে আলো পৃথিবীতে এসে পৌছেছে। ১৯০১ সালে এই ব্যাপারটার উপরে লর্ড কেলভিন গবেষণা করলেন। তার গবেষণা আজকালকার গণনায় সঠিক বলে প্রমাণিত হয়েছে : আলোক প্রায় ১৮,০০০ মাইল/সেকেন্ডে (300,000 Km(s) গতিবেগে চলে এবং একটা স্থির বিশ্বে, যার বয়স 1020x10 বৎসর সেখানে তারকারা এত সময় ধরে প্রোজ্জ্বল থাকতে পারে না যেখান থেকে তাদের আলো পৃথিবীতে এসে পৌছায়। এমনসব দূরবর্তী অঞ্চল থেকে যাতে দৃশ্যমান তারকা সব আকাশটা ভরে ফেলতে পারে। একথার অর্থ হলো এই যে, তারকা এত সময় পর্যন্ত প্রোজ্জ্বল থাকে না যাতে বিশ্ব বিকিরণের সঙ্গে তাদের পৃষ্ঠতল সুস্থিতির অবস্থায় আসতে পারে। স্পষ্টতই স্থির বিশ্বে, যার বয়স সসীম, রাত্রির আকাশ যদি অন্ধকার হয় তাহলে একই বয়সের একটা প্রসারমান বিশ্বের রাত্রিক আকাশ আরো অন্ধকার হবে রক্তিমসরণের জন্যে।
0 comments:
Post a Comment